নক্ষত্রের গোধূলি-[১২৫]-৬২

১১৯।
কোচ অনেকক্ষণ আগেই গ্লাসগো শহর ছেড়ে এসে মটর ওয়েতে চলছে। কোন রাস্তা দিয়ে চলছে তা চলার গতিই বলে দিচ্ছেএখনও মটর ওয়েতে রোড লাইট আছে আর কিছু দূর গেলে রোড লাইট থাকবে না। এত রাতে এত গাড়ি
কোথায় যায়? আচ্ছা লড়ি গুলি যাচ্ছে সে না হয় ঠিক আছে এক শহর থেকে আর এক শহরে কিংবা এক দেশ থেকে আর এক দেশে ভোর হবার আগে তাদের মাল পৌঁছে দিতে হবে। তাদের তাড়া আছে বলে দিন রাত লরি নিয়ে ছুটছে। কিন্তু, কার গুলি? তারা কোথায় যায়? এদেশে কত মানুষ রাস্তায় থাকে? এই জরিপ কি কখনো কেও করেছে? যেমন দেশ তেমন রাস্তা। কত যে রাস্তা জালের মত ছড়িয়ে রয়েছে তার কোন মাথা মুণ্ডু খুঁজে পায়না অথচ সব রাস্তাই এদের সিস্টেমে রয়েছে। সারা দেশের প্রতিটি ইঞ্চি এদের নখদর্পণেএমন ব্যবস্থা করে রেখেছে। পথে বের হয়ে কাউকে পথের সন্ধান জিজ্ঞেস করতে হয়নাজিপিএসে গন্তব্যের পোস্টকোড সেট করে দিলেই হলো, সেই ডান বাম বলে নিয়ে যাবে। কত দূর, কত সময় লাগবে সবই বলতে পারেমটর ওয়ের মাঝে মাঝে ইনফরমেশন বোর্ড আছে, তাতে স্পীড লিমিট দেখাচ্ছে। সামনে জ্যাম আছে কিনা তাও দেখাচ্ছে। সামনে বৃষ্টি হচ্ছে, স্নো হচ্ছে রাস্তা পিচ্ছিল হয়ে আছে তাও দেখাচ্ছে। ব্রিস্টলে মটর ওয়ে কন্ট্রোল রুম থেকে সারা দেশের মটরওয়ে কন্ট্রোল করছে। সিসি ক্যামেরা দিয়ে ছবি নিয়ে ইন্টারনেটের মাধ্যমে কনট্রোল রুমে বসে দেখছে। কোন জায়গা কত দূর সেখানে যেতে কোথায় মোড় নিতে হবে সব উজ্জ্বল সাইনে লেখা রয়েছে, সামনে কতদূরে সার্ভিস স্টেশন রয়েছে সব তথ্য পথে যেতে যেতে পথেই পাওয়া যাবে কাউকে কিছু জিজ্ঞেস করতে হয়না আর জিজ্ঞেস করবেই বা কাকে? শে পাশে দশ পনের মাইলের মধ্যে কোন মানুষের ছায়া পর্যন্ত দেখা গেলে তো জিজ্ঞেস করবে? এরা এদের নিজেদের অবস্থা জানে বলে সে ভাবেই এদের দেশ সাজিয়ে রেখেছে, কাউকে কারো কাছে যেতে হয়না। দূর পথে যাত্রা করে কোন অসুবিধায় পরতে হয় না।

রেডিওতে ট্রাফিক চ্যানেল রয়েছে। চব্বিশ ঘণ্টা সারা দেশের যে কোন রাস্তায় ঘটে যাওয়া সর্ব শেষ পরিস্থিতি বলে যাচ্ছে। পথে কারো ইঞ্জিন বিগরে গেছে কোন সমস্যা নেই। পাশে দাঁড় করে রেখে সামনে বা পিছনেই ফোন বক্স আছে, শুধু ফোন উঠিয়ে বললেই হবে। প্রতিটা রাস্তার নম্বর আছে। এখন তুমি কোথায়? এম ৫ কিংবা এ ৪৭ এর ৫ নম্বর রাউন্ড এবাউটের (গোল চক্কর) কাছে আমার গাড়ি বিগরে আছে। দশ মিনিটের মধ্যে পুলিশের গাড়ি, ক্রেন এবং এম্বুলেন্স যা যা লাগে সব এসে হাজিরমটর ওয়ের একেবারে বাম পাশের যে লেন সেটা পুলিশের জন্য নির্ধারিত। ফোনে ৯৯৯ এ ফোন করে নিজের অবস্থান জানিয়ে দিলেই পুলিশ কিংবা এম্বুলেন্স দশ মিনিটের মধ্যে হাজিরযারা প্রি পেইড ফোন ব্যাবহার করে তাদের ফোনে যদি কোন পয়সা নাও থাকে কোন অসুবিধা নেই, ৯৯৯ ডায়াল করলেই পুলিশ কন্ট্রোল রুমে লাইন চলে যাবে। তারপর নিজের অবস্থান জানতে চাইবে সঙ্গে সঙ্গে ওই স্থানীয় এলাকায় সংযোগ দিয়ে দিবে ব্যাস এবার নিশ্চিন্তায় দশ মিনিট অপেক্ষা করুন। আমাদের দেশের পুলিশের মত এসেই, কোথা থেকে এসেছেন, কেন এসেছেন, ওখানে কেন গিয়েছিলেন, এখানে কি করছেন, ঘাস খেয়েছেন কিনা, আমার জন্যে কয়লা আনেন নি কেন আমি এখন কি চিববো, আপনার ব্যাগে ওটা কি? এই রকম আমার লাগবে, আমাকে কত দিবেন আমার বাড়ি করার টাকা কম পরেছে, সামনে ঈদে আমার বৌয়ের গলার ফাঁসির অর্ডার দিয়েছি ওটার টাকা টান পরেছে তা আপনি কত দিবেন, সরকার যা বেতন দেয় তা দিয়ে তো আমার তিন দিনও চলে না। আচ্ছা কিছু দিতে পারবেন না তাহলে থাকুন এখানে আমরা চললাম।

এধরনের কথা বলা যায় তা এদেশের পুলিশ জানেই না। ডিউটিতে গিয়ে কারো কাছে এক কাপ চা তো দূরের কথা এক গ্লাস পানিও খাবে না। সরকার এদেশের নাগরিক, বসবাসকারি  সবার জন্য কত সুবিধা করে রেখেছে, এই জন্যেই একবার এসব দেশে আসলে কেও আর আমাদের মত দেশে ফিরে যেতে চায়না।

১২০।
চোখ অনেক দূরে চলে গেলো, যেখানে মনে হচ্ছে ঝুড়িতে করে কেও অনেকগুলি তারা নিয়ে যাচ্ছিল আর হাত থেকে ঝুড়ি পড়ে গিয়ে যেন এভাবেই ছড়িয়ে ছিটিয়ে পড়ে থাকা তারার মতই দেখাচ্ছে। কোন শহর হবে তবে খুব বেশি বড় নয়। মাঝে মাঝে এধরনের লোকালয় বা শহর দেখা যাচ্ছে। কোনটা বড় আবার কোনটা ছোট। এদেশে সমতল ভূমির খুবই অভাব। যার ফলে এই রকম অপেক্ষাকৃত কম উঁচু নিচু এলাকায় বসতি গড়ে উঠেছিলো এক সময়, এখন তা শহর হয়ে গেছে। আমাদের দেশের গ্রাম যেমন গাছ পালা, নদী নালা, খাল বিল, ঝোপ ঝাড় জঙ্গলে ভরা, কাচা ঘড় বাড়ি। পাখিরা সকালে ডেকে ডেকে ঘুম ভাঙ্গিয়ে চলে যায় আবার সন্ধ্যায় নিজের বাসায় ফিরে আসে, খালে বিলে জাল বড়শি বা পলো দিয়ে মাছ ধড়ার হিড়িক, ভোরে তারার মত ফুটে থাকা শাপলা, পুকুর পাড়ে বসে বৌ ঝিদের বাসন মাজার ফাঁকে হাসি তামাশা আর সুখ দুখের আমদানি রপ্তানি, অলস দুপুরে কোকিলের মন উদাস করা কুহু কুহু ডাক, বৌকে কথা কওয়াবার মিনতি, সন্ধ্যায় জোনাকির আলো, ঝিঝির ডাক, গোয়ালের ধুপের ধোয়া আর কাচা রান্না ঘড়ে রান্নার ধোয়ার সাথে কুয়াশার মাখামাখির একটা গন্ধ, মেয়েদের কুপি বা হারিকেন জ্বালাবার হুড়োহুড়ি। দূর দেশে থাকা ছেলের খবর জানতে ফোন করার জন্য দু মাইল হেঁটে কাছের বাজারে যাতায়াত, ফেরার পথে কালু ভাইয়ের মুদি দোকানে সন্ধ্যায় আসা সকালের খবরের কাগজে একটু চোখ ঘুড়িয়ে আসা। এদেশে এসবের কিছুই নেই।

এখানে গ্রামেও বিজলী বাতি জ্বলে। ঘড়ে ঘড়ে টেলিফোন আছে আবার রাস্তায় কয়েন বুথও আছে, ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট কানেকশন সহ কম্পিউটার, পাকা দালান কোঠা, সামনে ফুলের বাগান গ্যারেজ, কাছেই কর্নার শপ, ছোট খাট বাজার, রাস্তায় বিজলী বাতি, পাব, চার্চ সহ শহরের সবই আছে। আমাদের দেশের সাথে একটা ব্যাপারে মিল হলো ঘুঘুর ডাক। এখানে যখন তখন ঘুঘু পাখি ডাকেএদেশে গাছ পালা ঝোপ ঝাড় কম নয় বরঞ্চ আমাদের চেয়ে বেশি কারণ এদের তো গাছ পালা ঝোপ কেটে এনে ভাত রান্না করতে হয়না। বিশ বছর আগেও যেমন জঙ্গল ছিলো এখনও তেমনই পড়ে আছে। শুধু শীতে আর গরমে ন্যাড়া গাছ আর পাতার বাহার এই পার্থক্য। এদেশে যে কেও ইচ্ছা করলেই যেখানে সেখানে মাছ ধরতে পারেনা। বড়শি দিয়ে মাছ ধরতে হলে কাউন্সিল অফিসে ফি দিয়ে লাইসেন্স করে নিতে হবে। তার পরেও দেখা যায় কেও কেও খালের পাড়ে বড়শি ফেলে বসে আছে, মাছ ধরছে। ট্রাউট, কার্প, হেরিং আরও নাম না জানা অনেক ধরনের মাছ। এদেশে নিরিবিলি থাকা যায় বলে বরঞ্চ শহরের চেয়ে গ্রামের বাড়ি ঘড়ের দাম কিছু বেশি। গ্রাম হলেও যখন তখন গাড়ি নিয়ে বিশ ত্রিশ মিনিটেই শহরে যাওয়া যায়। ছুটির আগের রাতে ফোন করে ট্যাক্সি ডেকে পাবে চলে যায়সেখানে পানের সাথে নাচ ফুর্তি করে মাতাল হয়ে পাবের বারম্যান বা বাউন্সারকে বলে ট্যাক্সি ডেকে দিতে। এমনিতেও ট্যাক্সিগুলি পাবের কাছেই লাইন ধরে বসে থাকে কখন কোন মাতাল আসবে তার অপেক্ষায়। ট্যাক্সিতে করে বাড়ি এসে বিছানায় নয়তো ড্রইং রুমের কারপেটের পরেই বেহুশ। গ্রাম থেকে অনেকেই আবার দেড় দুই ঘণ্টা গাড়ি চালিয়ে বড় কোন শহরে গিয়ে অফিস করে।

১২১।
সমান গতিতে গাড়ি এগিয়ে চলছে কোন ঝাঁকুনি নেই, কোন বিরতি নেই কিংবা কোন ট্রাফিক সিগন্যাল নেই। সামনে দিয়ে কেও রাস্তা পাড় হচ্ছে না, কেও কাওকে ওভার টেক করছেনা। সবাই যার যার নিজ নিজ লেন দিয়ে নিজের সুবিধা মত স্পিডে চলছে। দূরে কাছে কোথাও ওই রকম ছোট বড় নানা শহরের অস্তিত্ব বোঝা যাচ্ছে। মনে হচ্ছে আকাশ থেকে ছোট বড় নানা মাপের নানা রঙের তারা এনে ছড়িয়ে রেখেছে। একই দৃশ্য দেখতে দেখতে এক সময় কেমন যেন একঘেয়েমি এসে ভর করলো। কী করবে, সহযাত্রীরা কেও কেও রিডিং লাইট জ্বালিয়ে পড়ছে কিন্তু তার সাথে পড়ার মত কিছু নেই। জুসের প্যাকেট খুলে একটু খেয়ে আর ভালো লাগল না আবার মুখ বন্ধ করে রেখে দিলেন। পায়ের জুতো জোড়া খুলে সিটের উপর পা তুলে জানালার কাঁচের সাথে পরদায় মাথা ঠেকিয়ে হেলান দিয়ে সামনে পা মেলে দিলেন। রাতের অন্ধকারে শুধ দুই পাশের সিটের মাঝে প্যাসেজ ডেকে মৃদু আলো জ্বলছে, কে কাকে দেখবে সবাই যার যার নিজের মাথা নিয়ে ব্যস্ত। আমাদের দেশের মত এখানে কে কি করছে না করছে তা দেখে কেও মনের সুখ পেতে চায় না। সিটের পাশ থেকে হেড ফোনটা নিয়ে কানে লাগালেন, না কোন লাভ নেই সব চ্যানেলেই যন্ত্রণা দায়ক ইংলিশ গান। হেড ফোন রেখে দিলেন। ঘড়ি দেখলেন রাত সাড়ে তিনটা বাজে। বাংলাদেশে এখন সকাল সাড়ে নয়টা, মনি কি করছে? ছোট মেয়ে কি স্কুলে গেছে? ওর আবার স্কুলে না যাবার নানা রকমের ফন্দি ফিকির জানা আছে, স্কুল ফাকি দেবার ওস্তাদ। আজ কি করেছে কে জানেবড় দুই জন এতক্ষণ রেডি হচ্ছে কলেজ ইউনিভারসিটিতে যাবার জন্য। মনি তাদের নাশতা নিয়ে ব্যস্ত, ওরা বেরিয়ে গেলেই আবার দুপুরের রান্নার আয়োজন নিয়ে বসবে। কি বিচিত্র মানুষের মন মানুষের জীবন। যে মনিকে একবেলা না দেখে, অফিস থেকে ফিরে এসে যে মেয়েদের না দেখে তার শান্তি হোত না সেই মনি সেই মেয়েরা আজ কোথায় কত দুরে? না কত দূরে হবে কেন ওরা এইতো আমার বুকের মধ্যে, আমার চোখের পাতায়। আমি এইতো তিথির গায়ের গন্ধ পাচ্ছি, যূথী আমাকে তার ওড়না দিয়ে মুখের ঘাম মুছে দিচ্ছে,  বীথী মাকে বকছে এইতো ওরা।

সময়ের প্রলেপ। সময় কেমন অদ্ভুত এক প্রলেপ দিয়ে দেয় যা ভুলে থাকার আশ্চর্য এক ক্ষমতা যা কখনো সে কল্পনাও করতে পারেনা। আজ যাকে না হলে চলে না, যাকে না দেখে থাকা যায় না সময়ের ব্যবধানে তা কত বদলে যায়, বদলাতে হয়সময় তার প্রলেপ দিয়ে সব কিছু ঢেকে দেয় কিন্তু তার পরেও মনের ক্ষত কি ঢেকে রাখা যায়? যায় না। ঢেকে রাখার, ভুলে থাকার অভিনয় করে যেতে হয়, প্রয়োজনের তাগিদে সময়ের কঠিন বিচার মেনে নিতে হয় ।

মাইকে ড্রাইভারের কণ্ঠ ভেসে এলো, লেডিজ এন্ড জ্যান্টল ম্যান, আমরা কিছুক্ষণের মধ্যে সার্ভিস স্টেশনে থামবো আপনারা ত্রিশ মিনিট সময় পাবেন। সেই আগের মত একই ঘোষণা। আজ নেমে দেখে এটা আগের দেখা সার্ভিস স্টেশন না এটা অন্য আর একটা। তবে সেদিনের মত আজ অত ভিড় নেই। মনে হয় রাত বেশি বলে ভিড় কম। প্রথমে টয়লেটে পরে সেখান থেকে কফি শপে এসে কাগজের কাপে একটা এসপ্রেসো কফি নিয়ে খেতে খেতে ঘুরে ঘুরে দেখলেনবাইরে গাড়ির কাছেএসে একটা সিগারেট বানিয়ে জ্বালালেন

১২২।
সকাল সাড়ে সাতটার কিছু পরে ভিক্টোরিয়া কোচ স্টেশনে পৌঁছে সেখান থেকে আবার টিউব স্টেশনে হেঁটে এসে জোন এক এবং চার এর ডে টিকেট নিয়ে সার্কেল লাইন ধরে মনুমেন্ট টাওয়ারে নেমে আবারনর্দার্ন লাইনের ট্রেনে উঠে বসলেনএজওয়ারে নেমে প্রায় নয়টায় রিতা আপার বাসায় এসে দরজায় কলিং বেল বাজালেনঅনেকক্ষণ পর আপা দরজা খুললো, দেখে মনে হলো বেল শুনে ঘুম ভেঙ্গেছে।
-তুমি আমার ম্যাসেজ পাওনি?
-হ্যাঁ আপনি ফোন করেছিলেন শুনে আমি ফোন করেছিলাম কিন্তু কেও ফোন ধরেনি। তখন ভাবলাম আপনাকে আমার ফোন নম্বর দেয়া হয়নি নিশ্চয় আপনি ফিরোজের কাছে আমার নম্বর পেয়েছেন তাই ফিরোজকেও ফোন করেছি সেও বাসায় ছিলোনা বলে যোগাযোগ হয়নি। এদিকে আমার কোচ ছিলো সন্ধ্যা সাতটায়। আমি ওবান ছেড়ে এসে গ্লাসগো পৌঁছে আবার ফোন করেছিলাম তখনো কাউকে পেলামনা।
-আচ্ছা আস ভিতরে আস।
নিয়ে বসতে দিলেন।
-আপা আমি একটু টয়লেট থেকে আসি।
-আচ্ছা আস।
টয়লেট সেরে এসে দেখে আপা ড্রইং রুমে বসে আছে। তার পাশের আর একটা সোফায় বসে বললেন-
-আপা আসলে আমি তারপরে আর আপনার সাথে যোগাযোগ না করে ভুল করেছি। আপনি হয়তো আমি আসব কিনা এইরকম একটা দ্বিধার মধ্যে ছিলেন। এর মধ্যে আমার আর একবার ফোন করা প্রয়োজন ছিলো।

এতক্ষণে আপা মুখ খুললেন।
-আমি ফিরোজকেও বলেছি তোমাকে বলার জন্য, ব্যাপারটা হলো তোমার দুলাভাই তো অসুস্থ মানুষ, সে কখন কি করে না করে তার কোন ঠিক ঠিকানা নেই। সকালে উঠে ঘড় থেকে বের হয়ে হয়তো এক দিকে চলে গেলো। এখন কোথায় গেলো তাকে খুঁজে পাওয়া মুশকিল। এইতো কদিন আগেও এরকম করেছে। কাকে কি বলে তারও কোন ঠিক নেই। বিশেষ করে অপরিচিত মানুষ দেখলে সে ভীষণ ভয় পায়, বলে তোমরা আমাকে মেরে ফেলার জন্য ওকে এনেছ, তাই ডাক্তার বলেছে বাসায় কোন অচেনা মানুষ যেন না থাকে।
-কিন্তু দুলাভাই তো আমাকে চিনে আমার ব্যাপারেও কি এমন কথা বলবে?
-আহা, তুমি বুঝতে পারছ না তোমাকে যে সে চিনে একথা কি আর তার মনে আছে? তা যদি মনে থাকত তাহলে তো কোন কথাই ছিলো না, এটাই তার অসুখ।
-তাহলে আপা এখন কি করা যায়?
-তুমি কিছু মনে করনা রাশেদ, তুমি অন্য কোথাও থাকার ব্যবস্থা কর।
[চলবে]

No comments:

Post a Comment

Back to Top