মম চিত্তে নিতি নৃত্যে -[২৭]-২

কয়েকদিন পরেই নিশাত তাদের বাড়ির পাশেই পথের পাড়ে বিরাট এক লেবু গাছের নিচে বসে সমবয়সী মইন চাচার সাথে গল্প করছিলো এমন সময় ওরা কয়েক জন এক সাথে ওই পথেই স্কুলে যাচ্ছিল। হঠাৎ চোখে চোখ পরে গেল।

কি কথা হলো কি না হলো কে জানে! ওর পথ চলা থেমে গেল। ইতিমধ্যে সাথের সঙ্গীরা সবাই কিছুটা এগিয়ে গেছে, চট করে প্রায় দৌড়ের মতই এগিয়ে গিয়ে তাদের সাথে মিশে গেল। জাহাজে চাকরীতে আসার আগে সামান্য কথা হয়েছে তারপরে প্রথম ভয়েজ করে দেশে ফেরার পর সে আলাপ কিছুটা গাড় হয়েছে। ইউনিভার্সিটিতে ভর্তি হবার সময় থেকে শুরু করে যতদিন দেশে ছিল ততদিন প্রতিদিন একবার হলেও দেখা হয়েছে দুইজনে একসাথে বেড়িয়েছে ছবি তুলেছে। সে ছবি নিশাতের কেবিনে সাজিয়ে রেখেছে এই এর জন্যই তাহলে নিয়ে নিই, নাকি? নিজেকেই প্রশ্ন করল! গায়ের রঙ ফর্সা, গোল ধরনের চেহারা, গালের ডানপাশের তিল আর থুতনির নিচের আঁচিলটা চোখে পরার মত, দীর্ঘ এক হারা গড়ন, চোখে পরার মত সুন্দরী বলা চলে। নীল জমিনে লাল পাড় শাড়ি মানাবে ভালো। কিন্তু!! না, কোন কিন্তু নয়! যে করেই হোক এ শাড়ি তাকে দিতেই হবে। যে যা বলে বলুক। গতবার কত কি কিনে দিতে চেয়েছে কিন্তু আপার ভয়ে লোকলজ্জার ভয়ে কিছুই নিতে চায়নি। প্রথম ভয়েজেও যা নিয়েছিল তার কিছুই নেয়নি। সেগুলি নিশাতের আলমারিতেই তোলা রয়েছে। যাক, যদি নাই নেয় তাহলে এটাও আলমারিতে তুলে রাখবে।
শেষ পর্যন্ত নিশাতই কিনে নিয়ে দোকান থেকে বেড় হয়ে দেখে মনির তখন বাইরে দাঁড়ানো।
কিরে, তোর হাতে এটা কি, কী কিনলি?
না, কিছু না।
চল, ওই দোকানে দেখি।
না রে মনির, আমার ভালো লাগছে না, আমি জাহাজে চলে যাব, তুই যা।
বলেই বাস স্ট্যান্ডের দিকে হাঁটা শুরু করলো। পিছন থেকে মনির ডাকল কিন্তু সে ডাক নিশাতকে ফেরাতে পারলো না।

কিছু দূর গিয়ে বুঝতে পারলো ভীষণ তেষ্টা পেয়েছে। পাশের দোকান থেকে এক ক্যান ঠাণ্ডা আপেল জুস নিয়ে বাস স্ট্যান্ডে এসে দাঁড়ালো। কি হলো আজ? নিশাতের কিছুই ভালো লাগছে না। এই নিশাত পাঁচ ফুট এগারো ইঞ্চি লম্বা, গায়ের রঙ উজ্জ্বল শ্যামলা, মাথায় কোঁকড়ানো চুল, ছিপছিপে গড়নের কঠিন ব্যক্তিত্বের মানুষ, সেই নিশাতের কি হলো আজ? সারাদিন বাইরে ঘুরবে, বাইরে খাবে এই মনে করেই তো বেড় হয়েছিলো। এখন তার সব কিছু কেমন যেন ওলট পালট হয়ে গেছে কিছুই মনে করতে পারছে না।

এক হাতে শাড়ির প্যাকেট আর এক হাতে জুসের ক্যান, আর মন চলে গেছে সেই ঢাকা শহরে সোবহান বাগের বীণা আপার বাড়িতে যেখানে আছে নিরু নামের সেই মেয়েটি। ও কি এখন বই খাতা হাতে ক্লান্ত দেহে কলেজ থেকে রিকশায় চেপে বাড়ি ফিরছে, না কি আজ ক্লাস বন্ধ বলে আপার সাথে আপার ঘর সংসার সামলাচ্ছে? কি রঙের কামিজ পরেছে আজ, দেখতে কেমন লাগছে? এই শাড়িতে কি ওকে মানাবে? শাড়িটা দেবার সময় কি বলবে? এই সব ভাবনায় যখন সে হারিয়ে গেছে তখন একটা বাস এসে দাঁড়ালো। কোথাকার বাস কোথায় যাবে তা কিছু না দেখেই পকেট থেকে বাস ভাড়া ২৫ ফিলস ভাংতি বের করে ড্রাইভারের হাতে দিয়ে টিকেট নিয়ে পিছনের একটা সিটে বসে পড়লো। বাস এসে দাঁড়ালো মোহাররেকে। নেমে কিছুটা পথ পায়ে হেঁটে খেজুর বাগানের মধ্যে গিয়ে বাগানের ছায়ায় বসে পড়লো।

বেশ গরম আজ, এপ্রিল মাস। এখনই এমন গরম জুন জুলাই মাসে কি হয় কে জানে! ওর পরনে লেভীস এর নীল জিনস, গায়ে হালকা আকাশ নীল টি শার্ট আর পায়ে ইতালির আরাম দায়ক জুতা তবুও ঘেমে ভিজে গেছে। বাগানের ছায়ায় কিছুক্ষণ বসে থেকে জুড়িয়ে নিলো। হাতের জুস তখন শেষ হয় নি। ঘাম শুকানোর পরে উঠে একটু হেঁটে সাগর পাড়ে একটা বড় পাথর পেয়ে তাতে বসে সাগরের দুর দিগন্তের দিকে তাকিয়ে রইলো। হাতের কাছে পাওয়া দুই একটা ঝিনুক কুড়িয়ে সাগরের পানিতে ছুড়ে দিল, আর একটা ঝিনুক নিয়ে উঠে গিয়ে বসল সাগরের ঢেউ যেখানে আসছে যাচ্ছে সেখানে।

বসে বসে ঝিনুক দিয়ে বালুকা বেলায় সেই মেয়েটির নাম লিখল। নিরু। তার বুকের ভিতরে যে নাম লিখা রয়েছে যা কেউ জানে না, শুধু সে একাই বয়ে বেড়াচ্ছে। একটু পরেই ঢেউ এসে সে নাম মুছে দিল। আবার লিখল আবার মুছে দিল। এই এক খেলা পেয়ে বসল নিশাতকে। নাম লিখছে আর ঢেউ এসে তা মুছে দিচ্ছে। মনে মনে হেমন্ত কুমারের গাওয়া সেই গান গুন গুন করছে এই বালুকা বেলায় ……………”  কত দিন থেকে ভাবছে এই নাম? না, মনে পরছে না। হয়ত সেই ছোট বেলায় যখন গ্রামের বাড়িতে বেড়াতে যেত আর ওকে দেখত চঞ্চলা হরিণীর মত দৌড়ে বেড়াতে। জাম গাছে উঠে জাম পেড়ে সবাইকে বিলাত নিশাতকেও দিতো। ওদের বাড়ির দক্ষিণ পাশে কুয়ার পাড়ে একটা জাম গাছ ছিল, এখন নেই। পুকুর পাড়ের গাব গাছে উঠে পাকা টস টসে হলুদ গাব পেড়ে এনে নিশাতকে দিতো, আহা সেই গাবের সে কি ঘ্রাণ এখনো মনে আছে। বাড়ির পূর্ব পাশে ছিল ঈদগাহ, ওদেরই পূর্ব পুরুষদের ওয়কফ করা। ঈদগাহের উত্তর পাশেই একটা বিশাল বকুল গাছ ফুলে ফুলে একাকার হয়ে যেত আর তার গন্ধে পুরো এলাকাটাই বদলে যেত।

শহরে থাকা নিশাত বকুলের গন্ধ নেয়ার জন্য গাছের কাছে দাঁড়াত আর বাতাস তার কানে কানে বলত, শুধুই কি বকুলের গন্ধ নেবার জন্য এখানে এসেছ? একটু এগিয়ে দেখ আরও কিছু আছে। বালক নিশাত অনভ্যস্ত বন পথে পায়ে পায়ে ঝোপ ঝাড় ডিঙ্গিয়ে দেখতে পেল সেই মেয়েটি আপন মনে কুড়ানো বকুল ফুলের মালা গাঁথছে। কি করবে এই মালা দিয়ে? ভোর বেলা অনেকক্ষণ ধরে বালিকার মালা গাথা দেখল, সেই তখন থেকেই কিনা! কোন ক্যালেন্ডার বা পঞ্জিকার পাতায় সে দিন তারিখের কথা লেখা নেই। ওই নাম নিশাতের বুকের ভিতর কোন এক গোপন ভল্টে লিখা হয়ে গিয়েছিল নিশাতের অজান্তে যা সে জানতেও পারেনি। এই নামটা যে কে লিখে রেখেছে তা কেউ জানে না। নিশাত নিজেও না। তখন শিহাব বা যুঁই কারো সাথে তেমন একটা ভাব জমে উঠেনি।

এই গোপন ভল্টের চাবি নিশাত ছাড়া কারো কাছেই নেই। যখন মনে হয় গোপন ভল্টের গোপন চাবি দিয়ে সে নিজেই শুধু খুলে দেখে সে সব স্মৃতি গুলি, বার বার, এ ভাবে ও ভাবে উলটে পালটে। আচ্ছা, নিরু কি জানে এই গোপন ভল্টের কথা? কেন জানে না, কেন? কখন যেন আবার ওই পাথরের উপর গিয়ে বসেছে। বসে বসে সূর্য ডোবা দেখল। উঠতে মন চাইছে না। সাগরের নোনা জলের কণায় আকাশ লাল হয়ে গেছে। দিনের আলো নিভে গেছে। দূর দিয়ে চলে যাওয়া জাহাজের নেভিগেশন বাতি দেখা যাচ্ছে, পিছনে ঘুরে দেখে শহরের আলোর ঝলকানি জ্বলে উঠেছে। এতক্ষণে মনে হলো ক্ষুধা লেগেছে। প্যাকেটটা হাতে নিয়ে উঠে দাঁড়ালো। হেঁটে বাস স্ট্যান্ডে এসে বাসে করে জাহাজে চলে এলো। 

মনে একটা বিষণ্ণ ভাব নিয়ে নিশাত জাহাজে ফিরে এসে দেখে শাহিন, জয়নুল ওরা সবাই রাতের খাবার খেয়ে সেলুনে বসে টিভি দেখছে, এরামকো চ্যানেলে একটা ডকুমেন্টারি ছবি চলছে। ওর প্রিয় সিরিজ কিন্তু আজ কোন আগ্রহ নেই। সেলুনে উঁকি দিয়ে দেখেই ফিরে এলো নিজের রুমে। পিছন থেকে শাহিন ডাকল কিন্তু তার কোন জবাব দিল না। কাপড় বদলে গরম জলে ঝারা একটা গোসল দিয়ে খেয়ে দেয়ে এসে আবার বসল সেলুনে। এর মধ্যে রাত সাড়ে নয়টা বেজে গেছে।
সাড়ে এগারোটা পর্যন্ত ওদের সাথে টিভি দেখল। জয়নুল বার বার জিজ্ঞেস করল কি কি করলে, কোথায় গেলে কিন্তু তার কোন জবাব নেই। ওরা আর চাপাচাপি করল না। জানে, নিশাত মাঝে মাঝেই হারিয়ে যায়, তখন হাজার ডাকাডাকি করেও ওকে ফেরান যায় না। আপন মনে বিভোর হয়ে থাকে। রাত সাড়ে এগারটা পর্যন্ত টিভি দেখে উঠে এলো। বারোটা থেকে সকাল ছয়টা পর্যন্ত ডিউটি। ডিউটির পোশাক পরতে হবে।

তার পরে ওরা বাহরাইনে তিন দিন ছিল এর মধ্যে আর কোথাও যায়নি। তৃতীয় রাতে সিতরা ট্যাংকার বার্থের আউটার এঙ্কারেজে এসে নোঙ্গর করলো। আধা ঘণ্টা পর পাইলট এসে জাহাজ জেটিতে নিয়ে গেল। এই জেটি কিনারা থেকে দশ মাইল সমুদ্রের দিকে। জেটিতে ভেরার পর ট্যাঙ্কে গ্যাস আছে কিনা বা পাইপ লাইনে কোন লিক আছে কি না, লিক করে সমুদ্রে তেল ভেসে যাবে কি না তা দেখার জন্য জেটি কর্তৃপক্ষের লোকজন এলো। তাদের সাথে হাই হ্যালো করে সাথে নিয়ে দেখাল। একটু পরেই আবার আসবে ইমিগ্রেশন, কাস্টমের লোকজন। তাদের অপেক্ষা। এই দেশে ওদের কোম্পানির রিজিওনাল হেড অফিস। তাছাড়া এখানে ওরা প্রায়ই আসে বলে কাস্টম ইমিগ্রেশন তেমন কোন ঝামেলা করে না। শুধু নিয়ম পালনের জন্য এসেই কাগজ পত্রে সই স্বাক্ষর করে চলে যায়। তবুও এই ফর্মালিটি গুলি শেষ না হলে জাহাজ লোড শুরু করতে পারে না। এক সময় সব কিছু হয়ে গেলে জাহাজ লোডিং শুরু হলো। লোডিং এর সম্পূর্ণ দায়িত্ব ওর। ক্রুড ওয়েল লোড করে স্পেন নিয়ে যাবে। লোডিং এবং তার পরে মাপজোক হিসাব নিকাশ ইত্যাদি ফর্মালিটি সারতে সারতে সকাল দশটা বেজে গেল। এখন পাইলটের অপেক্ষা। আধা ঘণ্টার মধ্যেই পাইলট এসে ওদের জাহাজ জেটি থেকে বের করে আউটার এঙ্কারেজে পৌঁছে দিয়ে নেমে পাইলট লঞ্চে করে চলে গেল আর ওরা যাত্রা শুরু করলো স্পেনের দিকে। কয়েক দিনের পথ।

জাহাজ চলছে। কিছুক্ষণের মধ্যে পিছনে ফেলে আসা মুক্তা দ্বীপের দেশ বাহরাইন দিগন্ত রেখার সাথে মিশে গেল। চারিদিকে শুধু পানি আর পানি, অথৈ নীল সাগরের বুক চিড়ে এগিয়ে চলছে। এই সময় সাধারণত সাগর কিছুটা উত্তাল থাকে কিন্তু আজ বেশ নীরব শান্ত। সাগর কি নিশাতের মনের কথা জানতে পেরেছে? পারার তো কথা, সেদিন বার বার করে সাগরের বালুকা বেলায় লিখা নাম মুছে দিচ্ছিল তখন কি আর পড়ে দেখেনি কার নাম মুছে দিচ্ছে! দুপুর বারোটা বেজে গেছে, নিশাত ব্রিজে এলো।
ব্রিজ হলো জাহাজের সব চেয়ে উঁচু অংশ যেখান থেকে জাহাজ নিয়ন্ত্রণ করে। এখানে নেভিগেশন সহায়ক নানা ধরনের অত্যাধুনিক যন্ত্রপাতি সাজান থাকে। হাই ফ্রিকোয়েন্সি রেডিও, ওয়ারলেস, ম্যাগনেটিক কম্পাস, জাইরো কম্পাস, স্টিয়ারিং ইন্ডিকেটর, ট্রিমিং ইন্ডিকেটর, ইকো সাউন্ডার, রাডার, থার্মোমিটার, হাইগ্রমিটার, আর থাকে লঙ্গিচুড ল্যাটিচুড মেপে জাহাজের অবস্থান দেখার জন্য ডেকা ন্যাভিগেটর, জিপিএস, নেভিগেশন লাইটের ইন্ডিকেটর, চার্ট(সামুদ্রিক ম্যাপ) ইত্যাদি নানা কিছু। জাহাজ চলন্ত অবস্থায় প্রতি ঘণ্টায় ঘণ্টায় তার পজিশন দেখে চার্টে চিহ্ন দিয়ে রাখতে হয়, এতে তার গতি সম্পর্কেও জানা হয়ে যায় এবং বিগত এক ঘণ্টায় কত দূর ক্রুজ করেছে এবং ডানে বা বামে কোন দিকে ড্রিফট করছে কি না তাও বোঝা যায়। ওদের জাহাজে ওরা পাঁচ জন বাঙ্গালি। ওদের সাথে আছে দুই জন ইরানি, পাঁচ জন ইন্দোনেশিয়ান এবং তিন জন ব্রিটিশ।

নিশাত ডিউটিতে এসে চিফ অফিসার অরুনের কাছ থেকে সব কিছু বুঝে নিলো। অভ্যাস মত এক বার রাডারের পর্দা দেখে নিলো, চার্টে এক নজর চোখ ঘুড়িয়ে আনল। রুটিন মাফিক যা যা দরকার সব দেখে দুই কাপ কাল কফি বানিয়ে তারেককে এক কাপ দিয়ে নিজে এক কাপ নিয়ে ব্রিজের বাইরে সাইড লাইটের স্ক্রিনের উপর যেয়ে বসল। সব ঠিক আছে। আশে পাশে ৫০ নটিক্যাল মাইলের মধ্যে কোন জাহাজ নেই।
স্টিয়ারিং করছিলো তারেক। জাহাজে এসে নেভিগেশনের সাথে দায়িত্ব বোধ, কঠিন নিয়মানুবর্তিতা, শৃঙ্খলা, মার্জিত আচরণ, পরিচ্ছন্নতা সব কিছুই শিক্ষা পেয়েছে স্কটিশ ক্যাপ্টেন আলস্টার ক্যাম্পবেল, নেভিগেশন বিশেষজ্ঞ সাবেক সাউদি নেভীর সিএনসি ইংলিশ ক্যাপ্টেন মার্টিন, সীম্যানশীপ বিশেষজ্ঞ ডাচ ক্যাপ্টেন হ্যাগওয়েল এর কাছে। অনেক কিছুই শিক্ষা পেয়েছে। সে এখন দক্ষ নাবিক, কদিন পরেই হবে এই রকম কোন এক জাহাজের কর্ণধার বা ক্যাপ্টেন। পরিচালনা করবে জাহাজের সার্বিক দায়িত্ব। বয়সে তরুণ, মনে রঙ্গিন স্বপ্ন। নিশাতের মনে আবার একটু ভিন্ন ধরনের স্বপ্ন।
সে ভাবে কি ভাবে মানুষের জন্য, দশের জন্য, দেশের জন্য কিছু করা যায় বড় কিছু। অনেক বড়। নিজের না হোক মানুষের মঙ্গল হবে এমন কিছু। ও ভাবে এক সময় এই পথে আমাদের পূর্ব পুরুষেরা শুধু মাত্র একটা ড্রাই কম্পাস সম্বল করে আকাশের সূর্য তারা নক্ষত্র আর দিগন্ত রেখা দেখে অনুমান করে নিজের অবস্থান নিরূপণ করে সম্পূর্ণ অনিশ্চিতের উপর ভিত্তি করে পালের জাহাজ নিয়ে কি ভাবে এই সাগর পাড়ি দিয়েছে আজ আমরা জিপিএস ব্যবহার করেও হিম সিম খাচ্ছি। যে জিপিএস মাত্র তিন মিটার এদিক সেদিক হয়। এই বিশাল কুল কিনারা বিহীন সাগরের মধ্যে তিন মিটার এমন কিছু নয়। তবুও কেমন দিশা হারিয়ে ফেলি। অথচ ক্যাপ্টেন কুক কি ভাবে অস্ট্রেলিয়া পৌঁছল, কলম্বাস কি নিয়ে আটলান্টিক পাড়ি দিয়ে আমেরিকা পৌঁছল নিশাতের কাছে এ এক বিস্ময়!
[চলবে]

No comments:

Post a Comment

Back to Top