নক্ষত্রের গোধূলি-[১২৫]-৭৮

১৫৫
নাসির চলে যাবার পর রাশেদ সাহেব যেন একা হয়ে গেলেন। সারাদিনে কারো সাথে তেমন কোন কথা নেই। দুই চার দিন পরে বাহাদুরের সাথে মোবাইল ফোনে কথা ছাড়া চুপচাপ একা একা থাকাই তার কাছে ভাল লাগে। ডিউটির পরে
সমসু ভাই এবং আসিয়াদ ভাই অনেক প্রসঙ্গ নিয়ে আলাপ করে কিন্তু তার কাছে কিছুই ভাল লাগে না কেমন যেন শূন্য ফাকা মনে হয় মেশিনের মত রাতে ডিউটি শেষ করে এসে দেশে থেকে সংগে করে আনা ক্যাসেট বাজিয়ে দিয়ে শুয়ে পরে। গান শুনতে শুনতে কখন যে ঘুমিয়ে পড়ে টের পায় না। সকালে উঠে আবার আগের দিনের মত করেই কোন ভাবে দিন চলে যায়। দেখতে দেখতে প্রায় মাস ছয়েক চলে গেল। নাসিরের আসার কোন সংবাদ পাচ্ছে না। একদিন ওর বাসায় ফোন করলো
-হ্যাঁ রাশেদ ভাই আমি গতকাল ভিসার জন্য এপ্লাই করেছি, আগামী পরশু যেতে বলেছে। ভিসা পেলে এক সপ্তাহের মধ্যেই চলে আসবো
এর কয়েকদিন পরে দুপুরে ডিউটির সময় ঢাকা থেকে ছোট ভাই নাহিদ ফোন করলো মুল কথা হল বড় মেয়েকে স্টুডেন্ট ভিসা নিয়ে বিলাত পাঠাতে চায়। রাশেদ সাহেব না বুঝে একটু বিরক্ত হয়ে জিজ্ঞেস করল
-আমি কি করে এই খরচ চালাব? এখানে কয় টাকা বেতন পাই?
-আপনাকে চালাতে হবে কেন, ও নিজেই কোন কাজ কর্মের ব্যবস্থা করে নিবে
-তেমন করতে পারলে পাঠিয়ে দে
-তাহলে আপনি একদিন লন্ডনে যান এবং আমি মেইলে কলেজের ঠিকানা পাঠাচ্ছি সেই অনুযায়ী কলেজ থেকে -ভর্তি হতে যা যা লাগে সেগুলি এনে পাঠিয়ে দেন
-কেন আমার লন্ডন যাবার কি দরকার, অনলাইনে পাবি না?
-না ওই কলেজের ফর্ম অনলাইনে পাওয়া যায় না আবার এই কলেজের এডমিশন হলে ভিসা পেতে অসুবিধা হয় না
-আচ্ছা ঠিক আছে মেইলে ঠিকানা পাঠিয়ে দে আমি সময় করে যাব
-সামনের মাসের ২০ তারিখের মধ্যে পাঠাবেন কিন্তু না হলে ভর্তির সময় ধরা যাবে না
-আচ্ছা দেখব, চেষ্টা করে এর আগেই পাঠিয়ে দিব।

অনেক হতাশা আর মন খারাপের মধ্যেও কিছুটা আশার আলো দেখতে পেলেনঅন্তত মেয়েটাও যদি কাছে আসতে পারে তবুও দিন গুলি একটা আশা পথ বেয়ে চলে যাবে। পর দিন লাইবেরিতে গিয়ে মেইল খুলে দেখে নাহিদ ইস্ট লন্ডনের একটা একাউন্টিং কলেজের ঠিকানা পাঠিয়েছে ঠিকানাটা লিখে নিয়ে আসলেন সাথে প্যাডিংটন স্টেশন থেকে ওখানে যাবার একটা গুগল ম্যাপ প্রিন্টকরে নিয়ে আসলেন। আগামী ছুটির দিনে রাতের ডিউটি শেষ করে রাতের ট্রেনে লন্ডন গিয়ে কলেজ থেকে কাগজ পত্র সংগ্রহ করে বিকেলের ট্রেনে চলে আসবে
[চলবে]

No comments:

Post a Comment

Back to Top